শহীদদের স্মরণে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্রোহের গান ও কাওয়ালী সন্ধ্যা

ওয়াসিফুর রহমান, ইবি প্রতিনিধি: বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের স্মরণ ও আধিপত্যবাদের বিরোদ্ধে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত হয়েছে ‘দ্রোহের গান ও কাওয়ালী সন্ধ্যা। এই সন্ধ্যাকে ইবির ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্ধ্যা বলে উল্লেখ করেছেন অনেকে।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে ক্যাম্পাসের ডায়না চত্বর ও মেইন গেটের মধ্যবর্তী স্থানে এই কাওয়ালী আসরের আয়োজন করা হয়। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া কাওয়ালী আসরে কবিতা, কাওয়ালী ও বিদ্রোহী গানের পরিবেশনা উপস্থাপন করছে ক্যাম্পাসের ব্যতিক্রমী সাংস্কৃতিক জোট এবং জাগ্রত মঞ্চের শিল্পীরা।

কাওয়ালী সন্ধ্যার এই আসরে কুন ফায়া কুন, নিজামুদ্দিন আউলিয়া, কারার ঐ লৌহ কপাট, মন আমার দেহ ঘড়ি, দামাদাম মাসকালান্দার, আল্লাহু আল্লাহু আল্লাহু, ছেড়ে দে নৌকা আমি যাব মদিনা, স্বাধীনতা তুমি সহ বিভিন্ন জনপ্রিয় গান এবং আমি মানতে পারবো না কবিতা ও ‘কাউয়া কাদের’ চরিত্রের অভিনয় পরিবেশন করেন শিল্পীরা। প্রশাসনের অনুপস্থিতিতে যেকোন বিশৃঙ্খলা এড়াতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।

কাওয়ালী সন্ধ্যায় উপভোগ করা শিক্ষার্থী আশিকুর বলেন, অনেকদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় ক্যাম্পাস নিষ্প্রাণ হয়ে গিয়েছিলো। কাওয়ালী সন্ধ্যার মাধ্যমে এ নিষ্প্রাণ ক্যাম্পাসে প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। উপরন্তু ক্যাম্পাস জীবনের কয়েক বছরে এমন আয়োজন দেখিনি। সবাই যেন মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে অনুষ্ঠান উপভোগ করেছে।

আরেক শিক্ষার্থী তানিয়া বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই সকল শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থা ভালো ছিলোনা। এতে অংশ নেওয়া অনেক শিক্ষার্থী আহত এবং নিহত হয়। ক্যাম্পাসেও একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত থাকায় যেন এই মানসিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল না। দীর্ঘদিন পর ক্যাম্পাসে এমন আয়োজন সবার মাঝে উদ্দীপনা ফিরিয়ে দিয়েছে।

ইবি সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, আমাদের এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের ফসল আজকের এই সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। আমরা এতদিন এক ফ্যাসিবাদী সিস্টেমের মধ্যে ছিলাম। আমরা সংগ্রাম করে ফ্যাসিবাদের হাত থেকে মুক্ত হয়েছি কিন্তু আমাদের যুদ্ধে এখনো শেষ হয়ে যায়নি। আমরা রক্ত দিয়ে যে স্বাধীনতা অর্জন করেছি তা আমাদের টিকিয়ে রাখতে হবে। আগামী দিনে এই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় হবে সকল মতের, সকল ধর্মের এক উর্বর ভূমি।

অনুষ্ঠানের আয়োজকরা জানান, এই কাওয়ালী মুসলিম কবিদের হাজার বছরের ইতিহাস বহন করে। বাঙালি মুসলিম কবিরা অজস্র কবিতা ও গান রচনা করেছেন। এই সকল কিছুই আমাদের সমাজের প্রাণ, এই প্রাণকে জাগিয়ে তোলার জন্যেই আজাদী মঞ্চের এই কাওয়ালী সন্ধ্যা। আমাদের মুসলিম কবিদের সৃষ্টিকে আমরা কাওয়ালির মাধ্যামে জাগিয়ে তুলব এবং বারবার আমরা উজ্জীবিত হব।

Leave a comment

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More

Translate »