ময়মনসিংহ, ৬ মে ২০২৫

মোঃ মোশাররফ হোসেন, সংবাদদাতা, ময়মনসিংহ:
বাংলাদেশের মহাকাশ প্রযুক্তির ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় সূচনা করেছে ধুমকেতু এক্সপ্লোরেশন টেকনোলজিস লিমিটেড (ধুমকেতুএক্স)। গতকাল ময়মনসিংহের তারেক সৃষ্টি অডিটোরিয়ামে দেশের প্রথম বাণিজ্যিক সাব-অরবিটাল রকেট "বিদ্রোহী"- এর প্রথম জনসাধারণের প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ বিভাগের কমিশনার মোঃ মোখতার আহমেদ।

রকেটের বৈশিষ্ট্য:
৬.১ মিটার দৈর্ঘ্যের "বিদ্রোহী" রকেটটি ৩৫ থেকে ৫০ কেজি পেলোড বহন করতে সক্ষম। রকেটটির প্রথম পর্যায়ে কঠিন জ্বালানি (এসআরবি) এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে বোসন লিকুইড ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। ২০২৬ সালে এই রকেট উৎক্ষেপণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

মিশন পরিকল্পনা:
রকেটটিতে ১০টি বৈজ্ঞানিক যন্ত্র, ৫টি ছাত্র কিউবস্যাট, ২০টি বাণিজ্যিক পেলোড এবং ৫টি জাতীয় প্রতীক বহন করা হবে। বিশেষভাবে রকেটের গায়ে ২০ কোটি বাংলাদেশির নাম খোদাই করা হবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

সিইও'র প্রতিক্রিয়া:
ধুমকেতুএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিয়ান আল রহমান (অলি) বলেন, "বিদ্রোহী কেবল একটি রকেট নয়, এটি বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। আমরা সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি যাতে দেশেই এই রকেট উৎক্ষেপণ করা যায়।"

চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা:
বর্তমানে বাংলাদেশে ব্যক্তিগত মহাকাশ উৎক্ষেপণের জন্য প্রয়োজনীয় আইনি কাঠামো না থাকায় প্রতিষ্ঠানটি জাপান, মালয়েশিয়া বা ইউএই-তে উৎক্ষেপণের কথাও ভাবছে। প্রতিষ্ঠানটি সরকারের কাছে মহাকাশ গবেষণা ও উৎক্ষেপণ সহজীকরণের জন্য নতুন নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে।

জাতীয় ভ্রমণ:
ময়মনসিংহের পর "বিদ্রোহী" রকেটটি ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের ৭টি বিভাগীয় শহরে প্রদর্শিত হবে। এই ভ্রমণের মূল উদ্দেশ্য তরুণ প্রজন্মকে মহাকাশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে উদ্বুদ্ধ করা।

আন্তর্জাতিক সহযোগিতা:
৫০ সদস্যের গবেষক দলে ৩০% সদস্য যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও এশিয়ার শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসেছেন। বাকিরা বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্নাতক।

বাণিজ্যিক সুযোগ:
প্রতিষ্ঠানটি মহাকাশে সৌরশক্তি চালিত ডিজিটাল বিলবোর্ড স্থাপনের মাধ্যমে ব্র্যান্ডিংয়ের সুযোগ দিচ্ছে, যা বিশ্বব্যাপী ৩ বিলিয়ন মানুষের কাছে দৃশ্যমান হবে।