রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের জোরালো আপিল: আদালতের রায় এখন সবার দৃষ্টি

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের জোরালো আপিল: আদালতের রায় এখন সবার দৃষ্টি

**ঢাকা, ৩০ এপ্রিল ২০২৪** — রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় প্রাক্তন ইসকন নেতা **চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী**-কে হাইকোর্ট প্রদত্ত জামিন আদেশ স্থগিতের দাবিতে **রাষ্ট্রপক্ষ জোরালো আপিল** করেছে। এই মামলার নাটকীয় পালাবদলে আইনি মহলে তৈরি হয়েছে তীব্র উত্তেজনা। বুধবার আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের পক্ষে অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড **হেলাল আমীন** এই আবেদন দাখিল করেন।

জামিন নিয়ে আইনি যুদ্ধের বিস্তৃত বিবরণ
গত ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ (বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মো. আলী রেজা) চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন শুনানির পর **”তাকে কেন জামিন দেওয়া হবে না?”**—এই মৌলিক প্রশ্ন উত্থাপন করে একটি রুল জারি করেছিলেন। দীর্ঘ শুনানি ও আইনি যুক্তিতর্কের পর গতকাল একই বেঞ্চ চিন্ময়ের জামিন মঞ্জুর করেন, যা রাষ্ট্রপক্ষের তীব্র প্রতিক্রিয়া ডেকে আনে।

চিন্ময়ের পক্ষের আইনজীবী **অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য** আদালতে সাফাই গেয়ে বলেন, **”এই আদেশের ফলে আমার ম্যান্ডেটের কারামুক্তির পথে আর কোনো আইনি বাধা অবশিষ্ট নেই।”** অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষের কঠোর অবস্থানের প্রতিনিধিত্বকারী **অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক** ও **আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া** হাইকোর্টের জামিন আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে আপিল বিভাগে স্পেশাল লিভ টু আপিলের আবেদন করেন।

 **মামলার গভীরে: অভিযোগ ও প্রতিক্রিয়া**
– **২০২৩ সালের ২৫ অক্টোবর**, চট্টগ্রামে সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের এক বৃহৎ সমাবেশে নেতৃত্ব দেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস। এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে **৩১ অক্টোবর** তার বিরুদ্ধে **জাতীয় পতাকা অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহের** অভিযোগে একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলায় আরও **১৮ জনকে** সহ-অভিযুক্ত করা হয়েছে।
– **২২ নভেম্বর**, রংপুরে আরেকটি বড় ধরনের সমাবেশের পর **২৫ নভেম্বর** তাকে ঢাকায় গ্রেফতার করা হয়। জামিনের আবেদন বারবার নাকচ হওয়ায় তিনি দীর্ঘদিন ধরে কারাবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।
– **২৬ নভেম্বর**, চট্টগ্রামের আদালত প্রাঙ্গণে চিন্ময়ের অনুসারীদের সঙ্গে পুলিশ ও আইনজীবীদের মধ্যে সংঘর্ষের এক ভয়াবহ ঘটনায় **আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ** নিহত হন। এই হত্যাকাণ্ড মামলাটিকে আরও জটিল ও সংবেদনশীল করে তোলে।

 **বিতর্কের কেন্দ্রে: রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র নাকি রাষ্ট্রের নিরাপত্তা হুমকি?**
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের সমর্থক ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর একাংশের দাবি, **”তাকে লক্ষ্য করে এই মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্ররোচিত ও ব্যবহার করা হচ্ছে।”** তারা এই মামলাকে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও বাক্স্বাধীনতার উপর হুমকি হিসেবে দেখছেন।

অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষ ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর জোরালো যুক্তি—**”রাষ্ট্রদ্রোহের মতো সংবেদনশীল ও গুরুতর অভিযোগের মামলায় জামিন দেওয়া রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।”**

**পরবর্তী পদক্ষেপ: কী হতে যাচ্ছে?**
এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—**আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষের এই আপিলে কী রায় দেন?** আদালতের সিদ্ধান্তই নির্ধারণ করবে, **চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী মুক্তি পাবেন নাকি রাষ্ট্রদ্রোহের এই মামলায় তার দীর্ঘ ও জটিল আইনি লড়াইয়ের সূচনা হবে?**

📌 **সর্বশেষ তথ্য:** রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের শুনানির তারিখ এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। তবে আইনি মহল ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলি এই মামলার প্রতিটি অগ্রগতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

**#চিন্ময়_কৃষ্ণ_দাস #রাষ্ট্রদ্রোহ_মামলা #হাইকোর্ট_জামিন #আইনি_সংঘাত #বাংলাদেশ_আদালত**

Leave a comment

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More

Translate »