ময়মনসিংহে অনিয়মের তথ্য জানতে চাওয়ায় দুই সাংবাদিককে গালাগালি ও হুমকির অভিযোগ, থানায় জিডি
ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের (মসিক) পরিবহন সেক্টরের অনিয়ম ও লুটপাটের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার হুমকির শিকার হয়েছেন দুই সাংবাদিক। এ ঘটনায় মসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) মো: শফি কামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন সময়ের কণ্ঠস্বরের জেলা প্রতিনিধি মো: রবিউল আউয়াল রবি এবং দৈনিক মুক্ত খবরের স্টাফ রিপোর্টার মীর মো: খালেদ হাসান।
ভুক্তভোগী দুই সাংবাদিক জানিয়েছেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের পরিবহন বিভাগের গাড়ি পরিচালনা, মালামাল ব্যবস্থাপনা এবং জ্বালানি খরচ সংক্রান্ত নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহ করে আসছিলেন তারা। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে সুনির্দিষ্ট কিছু তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে মসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: শফি কামালের কার্যালয়ে যান তারা।
তাদের ভাষ্যমতে, প্রথমে প্রকৌশলী শফি কামাল তথ্য প্রদানে নানা অজুহাত দেখিয়ে দীর্ঘ সময় টালবাহানা করতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন এবং দুই সাংবাদিককে মারধরের জন্য এগিয়ে আসেন। তবে অফিসের অন্যান্য কর্মচারীরা পরিস্থিতি সামাল দিয়ে বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সক্ষম হন।
নিজেদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে দাবি করে ওইদিন রাতেই কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন দুই সাংবাদিক। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: সফিকুল ইসলাম খান জানান, সাংবাদিকদের করা জিডির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ভুক্তভোগী মীর মো: খালেদ হাসান বলেন, “দুর্নীতির তথ্য চাওয়ায় আমাদের সঙ্গে যেভাবে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়েছে, তা সরাসরি সাংবাদিকতার স্বাধীনতার ওপর আঘাত। আমরা জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। অভিযুক্ত কর্মকর্তার শাস্তির দাবিতে সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসকের কাছেও লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।”
এদিকে ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ময়মনসিংহ জেলার পেশাদার সাংবাদিক সমাজ। বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ময়মনসিংহ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সজিব রাজভর বিপিন বলেন, “সংবাদ সংগ্রহের প্রয়োজনে তথ্য চাওয়ার অধিকার সাংবাদিকদের আছে। দুর্নীতির খবর চাপা দিতে সাংবাদিকদের হুমকি দেওয়া কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও দোষী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।”
সাংবাদিক সমাজের নেতারা আরও জানান, যদি দোষী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয়, তবে তারা বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবেন।